বর্ণালী প্রতিদিন ডেস্ক: গত ২৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) থেকে যে কোনো ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমের অন্যতম বড় খবর ছিল লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার গুঞ্জন। কোনো আনুষ্ঠানিক বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা ছিল না কারোর। কিন্তু এদিক-ওদিক থেকে উড়ো খবর ভেসে আসছিল অনেক। ধরেই নেয়া হয়েছিল, এ দফায় বার্সেলোনার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে মেসির। কিন্তু না! দীর্ঘ এ ঘটনার অবসান ঘটালেন মেসি নিজেই। আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমি বার্সাতেই থাকছি।’ তিনি যে সত্যিই এবার ক্লাব ছাড়তে চেয়েছলেন সেটিও খোলাখুলিই বলেছেন মেসি। তবে এখন সিদ্ধান্ত বদলানোয় মাঠের খেলায় এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলেছেন বার্সেলোনার অধিনায়ক।
গোলডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, ‘আমি যতই চলে যেতে চেয়েছিলাম না কেন, আমার মনোভাব আগের মতোই থাকবে। আমি আমার সর্বোচ্চটাই দেব। আমি সবসময়ই জিততে চাই। আমি প্রতিযোগিতায় থাকতে পছন্দ করি, কখনই হারতে চাই না। আমি সবসময়ই ক্লাবের জন্য, ড্রেসিংরুমের জন্য এবং নিজের জন্য সেরাটাই চাই।’ গত ২৫ আগস্ট এক ফ্যাক্স বার্তায় চুক্তির একটি ধারা কার্যকর করে ফ্রি ট্রান্সফারে ক্যাম্প ন্যু ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানান মেসি। তবে বার্সেলোনার দাবি, ওই ধারা কার্যকর করার মেয়াদ গত ১০ জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে চুক্তি অনুযায়ী হয় তাকে থাকতে হবে ২০২০-২১ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত, নয়তো পরিশোধ করতে হবে রিলিজ ক্লজের পুরো ৭০ কোটি ইউরো।
গত ৩০ আগস্ট লা লিগাও বার্সেলোনার দাবির পক্ষে মত দেয়। চুক্তিপত্র পর্যালোচনা করে স্পেনের শীর্ষ লিগ কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্লাবটিতে মেসির চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করার শর্তটি এখনো কার্যকর আছে। লা লিগার ওই মন্তব্যের জবাবে শুক্রবার মেসির পক্ষ থেকে ‘সংস্থাটির পর্যালোচনা ভুল’ দাবি করে পাল্টা বিবৃতি দেন তার বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি। তবে বার্সেলোনায় আগামী মৌসুম আর্জেন্টাইন তারকা থাকবেন কি-না, সে সম্পর্কে বিবৃতিতে কিছু বলা ছিল না।
দুপক্ষের অনড় অবস্থানে শুরু হয় দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সম্পর্কের টানাপড়েন। মাঝে গণমাধ্যমে খবর আসে, ভালোভাবে বিদায় নিতে মেসি আলোচনায় বসতে চাইলেও বার্সেলোনার পক্ষ থেকে না করে দেওয়া হয়। অবশেষে গত বুধবার তারা আলোচনায় বসে। আর্জেন্টাইন তারকার পক্ষে ছিলেন তার বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি, ভাই রদ্রিগো এবং একজন আইনজীবী। আর কাতালান ক্লাবটির পক্ষে ছিলেন সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউ ও কর্মকর্তা হাভিয়ে বোর্দাস।
ওই মিটিংয়ে কোনো সমাধান না মিললেও পরবর্তী সময় তারা আবারও বসতে পারেন বলে ইঙ্গিত মেলে। তাতে আদালতের বাইরে সমস্যা সমাধানের আশাও জাগে। মেসির কথাতেও সেটাই প্রমাণ হলো। ১৩ বছর বয়সে যেই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন, যেখানে তার বেড়ে ওঠা, বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন হয়ে ওঠা, রেকর্ড ছয়বার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জয় যে জার্সি গায়ে, সেই প্রিয় ঠিকানার সঙ্গে মধুর সম্পর্কের শেষটা আদালতে করতে চাননি বলেই থেকেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।